লেখার জগতে আমি নতুন। অনেক কথা জমা থাকে। কথার ফুলঝুরি তো ফোটাতে পারি না। তাই লিখি। যা ভাবি, লিখে ফেলি, যদি ভাল লাগে - - - -
আজ পারুলের জন্মদিন। পারুল আমাদের বহু পরিচিত সেই মেয়ে যে স্বামী,সন্তান, সংসার আগলে নিজেকেই প্রায় ভুলতে বসেছে। একে একে পঁয়তিরিশটি বসন্ত পার করল সে।আজ দিনটা একটু অন্যরকম হতে পারত। কিন্তু, সকাল থেকে এখনও পর্যন্ত একটি শুভেচ্ছাও সে পায়নি করো কাছ থেকে।
বাবাকে পারুল হারিয়েছে অনেকদিন আগে। মা বয়সের ভারে অনেক কিছুই মনে রাখতে পারে না এখন। স্বামী!! তার সময় কোথায় ? সারাদিন ছুটছে "টার্গেট" এর পেছনে। বসের চোখরাঙানি, হঠাৎ মিটিং, ডেডলাইন ফলো করা - এত কিছু বোঝেনা পারুল। সে শুধু জানে, তার স্বামী ভীষণ ব্যস্ত। স্ত্রী, সন্তান, সংসারের দিকে তাকানোর সময় নেই তার। আর সন্তানেরা ? দুই সন্তানের মা পারুল। তাদের কাছে জন্মদিনের অর্থ তো "আমার জন্মদিন"। মায়ের জীবনেও যে "জন্মদিন" দিনটা থাকতে পারে , এতো তারা ভাবতেও পারে না। ছোট ছেলের জন্মদিন মানে মায়ের কাছে আবদার - এবারের কেকটা কিন্তু বেশ বড় হওয়া চাই, আমার সব প্রিয় বন্ধুরা আসবে কিন্তু, "Return gift" টা - একটু ভালো দিও। মেয়ে তো এখন বেশ বড়। জন্মদিন - বাড়িতে!! অসম্ভব। এবারেও যদি পার্টিটা ভালো রেস্টুরেন্টে না হয়, তাহলে আর বন্ধুদের কাছে মুখ থাকবে না।
সব কাজের ফাঁকেও আজ পারুলের মাঝে মাঝেই মনে পরে ফেলে আসা কিছু দিনের কথা। বন্ধুদের সাথে হই- হুল্লোড় , দল বেঁধে স্কুলে যাওয়া , পড়তে যাওয়া , পূজো-প্যান্ডেলে আড্ডা দেওয়া, এসব তো ছিল পারুলের জীবনেও। কি করে হারিয়ে গেল ছেলেবেলার সেই বন্ধুরা। আধুনিক প্রযুক্তির সুবাদে পুরোনো বন্ধুদের নাকি আবার ফিরে পাওয়া যায়, শুনেছে পারুল। কিন্তু জানেনা কিভাবে। কে শিখিয়ে দেবে তাকে ? স্বামীর তো সময় নেই। আর ছেলেমেয়েরা শুনলেই হাসে - ' মা, তুমি ওসব পারবে না'। তাহলে উপায় ! পারুলের জীবন তো স্বামী - সন্তানেই সীমাবদ্ধ। এর বাইরে যে সে কিছু জানে না।
পারুল কাউকে বোঝাতে পারে না, কিছু ইচ্ছে তারও আছে। কাউকে বলে না সে, একটু নিশ্বাস নিতে ইচ্ছে করে তারও। তার জীবনেও একসময়ে ছিল ' জন্মদিন'। তার ' জন্মদিন ' ছিল - মায়ের হাতে তৈরী পায়েসে, ভোরবেলা উঠে মায়ের পূজো দেওয়ায় - শুধু তারই জন্য। আর ছিল বাবার আশীর্বাদের হাত।
সব কাজ শেষে পারুল গিয়ে দাঁড়ায় বাবার ছবির সামনে, জানে, বাবা আজও তার আশীর্বাদের হাত রাখবেন পারুলের মাথায়। মনে পরে বাবা সবসময় বলতেন - নিজেকে ভালোবাসো, তবেই পারবে সবাইকে ভালোবাসতে। সবাইকে ভালোবাসতে হয়ত পারুল পেরেছে। কিন্তু নিজেকে ? আজ তাই অন্তত একটি বার বাবার কথা রাখতে সে নিজেই নিজেকে বলে -
যেকোনো রকম প্রশ্ন থাকলে আমাদের জানাতে দ্বিধা করবেন না। আমরা সর্বদা আপনাদের সহায়তায় সচেষ্ট।
আপনাদের মূল্যবান মতামত ও প্রতিক্রিয়া জানাতে নিচে রিপ্লাই বক্সে কম্মেন্ট করুন।
সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের পরবর্তী পোস্ট প্রকাশিত হলে আপডেট পাওয়ার জন্য। ফলো এবং লাইক করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়। বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। পরবর্তী পোস্ট নিয়ে খুব শীঘ্রই আসছি আপনাদের সামনে। ধন্যবাদ।
Please don’t hesitate to ask any question to let us know more about your requirements. We are always there to assist you to make you perform better.
আজ পারুলের জন্মদিন। পারুল আমাদের বহু পরিচিত সেই মেয়ে যে স্বামী,সন্তান, সংসার আগলে নিজেকেই প্রায় ভুলতে বসেছে। একে একে পঁয়তিরিশটি বসন্ত পার করল সে।আজ দিনটা একটু অন্যরকম হতে পারত। কিন্তু, সকাল থেকে এখনও পর্যন্ত একটি শুভেচ্ছাও সে পায়নি করো কাছ থেকে।
বাবাকে পারুল হারিয়েছে অনেকদিন আগে। মা বয়সের ভারে অনেক কিছুই মনে রাখতে পারে না এখন। স্বামী!! তার সময় কোথায় ? সারাদিন ছুটছে "টার্গেট" এর পেছনে। বসের চোখরাঙানি, হঠাৎ মিটিং, ডেডলাইন ফলো করা - এত কিছু বোঝেনা পারুল। সে শুধু জানে, তার স্বামী ভীষণ ব্যস্ত। স্ত্রী, সন্তান, সংসারের দিকে তাকানোর সময় নেই তার। আর সন্তানেরা ? দুই সন্তানের মা পারুল। তাদের কাছে জন্মদিনের অর্থ তো "আমার জন্মদিন"। মায়ের জীবনেও যে "জন্মদিন" দিনটা থাকতে পারে , এতো তারা ভাবতেও পারে না। ছোট ছেলের জন্মদিন মানে মায়ের কাছে আবদার - এবারের কেকটা কিন্তু বেশ বড় হওয়া চাই, আমার সব প্রিয় বন্ধুরা আসবে কিন্তু, "Return gift" টা - একটু ভালো দিও। মেয়ে তো এখন বেশ বড়। জন্মদিন - বাড়িতে!! অসম্ভব। এবারেও যদি পার্টিটা ভালো রেস্টুরেন্টে না হয়, তাহলে আর বন্ধুদের কাছে মুখ থাকবে না।
সব কাজের ফাঁকেও আজ পারুলের মাঝে মাঝেই মনে পরে ফেলে আসা কিছু দিনের কথা। বন্ধুদের সাথে হই- হুল্লোড় , দল বেঁধে স্কুলে যাওয়া , পড়তে যাওয়া , পূজো-প্যান্ডেলে আড্ডা দেওয়া, এসব তো ছিল পারুলের জীবনেও। কি করে হারিয়ে গেল ছেলেবেলার সেই বন্ধুরা। আধুনিক প্রযুক্তির সুবাদে পুরোনো বন্ধুদের নাকি আবার ফিরে পাওয়া যায়, শুনেছে পারুল। কিন্তু জানেনা কিভাবে। কে শিখিয়ে দেবে তাকে ? স্বামীর তো সময় নেই। আর ছেলেমেয়েরা শুনলেই হাসে - ' মা, তুমি ওসব পারবে না'। তাহলে উপায় ! পারুলের জীবন তো স্বামী - সন্তানেই সীমাবদ্ধ। এর বাইরে যে সে কিছু জানে না।
পারুল কাউকে বোঝাতে পারে না, কিছু ইচ্ছে তারও আছে। কাউকে বলে না সে, একটু নিশ্বাস নিতে ইচ্ছে করে তারও। তার জীবনেও একসময়ে ছিল ' জন্মদিন'। তার ' জন্মদিন ' ছিল - মায়ের হাতে তৈরী পায়েসে, ভোরবেলা উঠে মায়ের পূজো দেওয়ায় - শুধু তারই জন্য। আর ছিল বাবার আশীর্বাদের হাত।
সব কাজ শেষে পারুল গিয়ে দাঁড়ায় বাবার ছবির সামনে, জানে, বাবা আজও তার আশীর্বাদের হাত রাখবেন পারুলের মাথায়। মনে পরে বাবা সবসময় বলতেন - নিজেকে ভালোবাসো, তবেই পারবে সবাইকে ভালোবাসতে। সবাইকে ভালোবাসতে হয়ত পারুল পেরেছে। কিন্তু নিজেকে ? আজ তাই অন্তত একটি বার বাবার কথা রাখতে সে নিজেই নিজেকে বলে -
"শুভ জন্মদিন , পারুল "
Sudipa Ghosh
আপনাদের মূল্যবান মতামত ও প্রতিক্রিয়া জানাতে নিচে রিপ্লাই বক্সে কম্মেন্ট করুন।
সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের পরবর্তী পোস্ট প্রকাশিত হলে আপডেট পাওয়ার জন্য। ফলো এবং লাইক করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়। বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। পরবর্তী পোস্ট নিয়ে খুব শীঘ্রই আসছি আপনাদের সামনে। ধন্যবাদ।
Please don’t hesitate to ask any question to let us know more about your requirements. We are always there to assist you to make you perform better.
No comments:
Post a Comment