আজ প্রথম আমার এখানে পদার্পন। জানিনা এখানে আমার গ্রহণযোগ্যতা কেমন হবে। তবে আশা রাখি আমি যুগোপযোগী কিছু লেখা আপনাদের দিতে পারবো। কেমন লাগলো জানালে অবশ্যই ভালো লাগবে।
একবিংশ শতাব্দীর দোড়গোড়াতে দাঁড়িয়ে আজ আমি মধ্যগগনে। আকাশ জুড়ে শুনিনু ঐ বাজে – ঠিক এভাবেই জীবনের প্রতিটি অনুভূতিতে , জীবন দর্শনে , জীবনচর্চায় রয়েছ তুমি। রয়েছ জীবনের প্রতিটা ধাপে , প্রতিটি মুহুর্তে। রবির আলো নিজের দেহে মেখে যেমন বেড়ে ওঠে প্রতিটি চারা- গাছ , তেমনি তোমার আলোর দীপ্তিতে আমি সম্পূর্ণ হাওয়ার চেষ্টা করেছি মাত্র। সেই কোনো একসময়ে , সেই ছেলেবেলা – কবেকার সেই দিনগুলো – এখনও যেন স্পষ্ট শুনতে পাই “আমি যদি হতেম ফেরিওয়ালা ……” সেই ডাক। দুপুরবেলা মায়ের পাশে শুয়ে শুয়ে স্বপ্ন দেখে ঘুম ভেঙে যেত “ও কাবুলিওয়ালা, কাবুলিওয়ালা- তোমার ঝুলিতে কী আছে – হাতি আছে , ঘোড়া আছে “। তোমার হাত ধরেই হয়ত বা শিখেছিলাম “ছোট খোকা বলে অ আ , শেখেনি সে কথা কওয়া”। আবার মায়ের হাত ধরে স্কুলে যাওয়ার সময় মনে পড়ে “কাল ছিল ডাল খালি , আজ ফুলে যায় ভরে , বল সে তো তুই মালী হয় সে কেমন করে”। আর একটু বড় হয়ে শিখেছি
একবিংশ শতাব্দীর দোড়গোড়াতে দাঁড়িয়ে আজ আমি মধ্যগগনে। আকাশ জুড়ে শুনিনু ঐ বাজে – ঠিক এভাবেই জীবনের প্রতিটি অনুভূতিতে , জীবন দর্শনে , জীবনচর্চায় রয়েছ তুমি। রয়েছ জীবনের প্রতিটা ধাপে , প্রতিটি মুহুর্তে। রবির আলো নিজের দেহে মেখে যেমন বেড়ে ওঠে প্রতিটি চারা- গাছ , তেমনি তোমার আলোর দীপ্তিতে আমি সম্পূর্ণ হাওয়ার চেষ্টা করেছি মাত্র। সেই কোনো একসময়ে , সেই ছেলেবেলা – কবেকার সেই দিনগুলো – এখনও যেন স্পষ্ট শুনতে পাই “আমি যদি হতেম ফেরিওয়ালা ……” সেই ডাক। দুপুরবেলা মায়ের পাশে শুয়ে শুয়ে স্বপ্ন দেখে ঘুম ভেঙে যেত “ও কাবুলিওয়ালা, কাবুলিওয়ালা- তোমার ঝুলিতে কী আছে – হাতি আছে , ঘোড়া আছে “। তোমার হাত ধরেই হয়ত বা শিখেছিলাম “ছোট খোকা বলে অ আ , শেখেনি সে কথা কওয়া”। আবার মায়ের হাত ধরে স্কুলে যাওয়ার সময় মনে পড়ে “কাল ছিল ডাল খালি , আজ ফুলে যায় ভরে , বল সে তো তুই মালী হয় সে কেমন করে”। আর একটু বড় হয়ে শিখেছি
“মেঘের মাঝে যারা থাকে ,
“তারা আমায় ডাকে , আমায় ডাকে ,
বলে মোরা কেবল করি খেলা
সকাল থেকে দুপুর সন্ধ্যেবেলা”
কখনো আবার স্বপ্নলোক থেকে বাস্তব জগতে এনে দাড় করাও তুমি। তোমার সাথে গলা মিলিয়ে বললাম , বীরপুরুষের মতো , মাকে নিয়ে যাবো অনেক দূরে। আবার বইপত্র সরিয়ে রেখে মায়ের সাথে বনবাসী হাওয়ার ও সাধ হলো। এইভাবে আসতে আসতে একদিন এসে দাঁড়ালাম কৈশোর থেকে যৌবনে। তার থেকে প্রাপ্তবয়স্কে।গোড়া র হাত ধরে চিনলাম নিজের মা’ ই শুধু মা নয় – আমাদের যে আরো একজন মা আছেন – দেশ-মাতৃকা। আর তুমি যে আমার আপন সুরে এ ঘাট থেকে ও ঘাটে সোনার তরী বাইয়ে নিয়ে চলেছ। সীমার মাঝে তুমি অসীম – এর সন্ধান দাও। যৌবনের সীমারেখায় দাঁড়িয়ে বলতে শিখেছি –
“সংকোচের ও বিহ্বলতা নিজেরই অপমান ,
সংকটেরও কল্পনাতে হয়োনা মৃয়মান
মুক্ত করো ভয় ,
আপনা মাঝে শক্তি ধর নিজেরে কর জয়”
সংকটেরও কল্পনাতে হয়োনা মৃয়মান
মুক্ত করো ভয় ,
যদিও আমি এক কর্মরতা গৃহবধূ কিন্তু তুমি ছাড়া আমি যে অচল, অসম্পূর্ণ, নব্বইয়ের দশকে যেদিন মহাবিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাড়পত্র হাতে পেয়েছিলাম, সেদিনই তুমি শিখিয়েছিলে তোমার প্রতিবাদী কণ্ঠকে আপন করে নিতে। আমি বলে উঠেছিলাম - "বাঁধ ভেঙে দাও, বাঁধ ভেঙে দাও ............ ভা ........... ঙো।" এর পর জীবন যুদ্ধের জাহাজ আরো এগিয়ে
চলেছে। কোনো এক ফালগুনী পূর্নিমার রাতে জ্যোৎস্না সমুদ্রে পাড়ি দিয়ে এগিয়ে চলেছি অজানা উদ্যেশ্যে - জানিনা এপথের শেষ কোথায়, শ্রান্ত ক্লান্ত যাত্রীর একমাত্র ভরসা যে তুমিই। মনকে উদ্দীপ্ত করতে তুমিই বলিয়েছ, "ভালোবাসি, ভালোবাসি ..........." এই ভালবাসার যে কোনো স্থান নেই - আমার জীবন পাত্র উছলিয়া উঠিছে ভরে - সে যে আজ সোনার তরীর মতই কানায় কানায় পূর্ণ - ঠাই নাই , ঠাই নাই , ছোট সে তরী , আমারই সোনার ধানে গিয়াছে সে ভরি , তোমার লাবণ্য যে জীবনযুদ্ধে কখনো হেরে যায়নি কবি। নৌকা বিলাস , শ্যামা যেন আমার আধুনিকতাকে নতুন করে চিনতে শিখিয়েছে। আর বজ্রসেন - সেতো আমার অনেক না বলা কথা বলা কবি। লাবণ্যকে ভালোবেসে কবি যেন বার বার শুনিয়েছেন - বিদায় বন্ধু বিদায়। এই হচ্ছে আধুনিকতা।এ ভালোবাসা শুধু মানুষের নয় , নয় প্রকৃতিরও। এ ভালোবাসা যেন জাগতিক পরিমণ্ডল ছাড়িয়ে এক নিরাকারের প্রতি - যা ছড়িয়ে আছে নিঃসীম শূন্যে। এই আধুনিকতা কিন্তু কখনোই স্বেচ্ছাচারিতা নয়। তাইতো আমার মতো রবিঠাকুরের গৃহবধূরা বিবাহসভাতেই বুঝিয়েছিল, এ রাগিণী কেবল একদিনের নহে। একে যত্নে লালন পালন করে বড় করে তুলতে হবে -তারপর সে মহীরূহ হয়ে বটবৃক্ষের মত ছায়া দেবে, তাতে আশ্রয় নেবে কত কেউ ........... নাম না জানারা এসে একই সূত্রে বাঁধবে মালা, একই সূত্রে গাইবে গান।এইভাবেই সংসারের ক্ষেত্রে রাঙিয়ে দিয়ে নিজেকে বসন্তের গানের ডালি দিয়ে পূর্ণ করার চেষ্টাতেই যে জীবন তরী বয়ে চলেছে। একুল থেকে ওকুলে জীবন নাট্যের সায়হ্নে আজ আমি বোধ হয় এক মধ্য গগনের সূর্য।গ্রীষ্মের দাবদাহের মতো সমস্ত অগ্রাহ্য করে কখনো বয়ে চলেছি মেঘের সঙ্গী হয়ে, উড়ে চলেছি যে দিক দিগন্তের ও পানে - নিঃসীম শূন্যে শ্রাবণ বরিষণ সঙ্গীতে। তোমার প্রিয় বৌঠান, মাধবীলতা আরো কত কেউ - এদেরকে যে ভূষণহারে ভরিয়ে দিয়েছ সেই আবরণেই আমি যে আবৃত হতে চাই - তবে ভোলাতে চাইনা রূপে, ভোলাতে চাই যে, নিজেকে রবি রসে সমৃদ্ধ করে - তবেই তো আমার সার্থকতা। সুরূপার অনাহুত চরিত্রকে তুমি অবগুণ্ঠনবতী করেছিলে আবার বজ্রমুষ্ঠি হাতে কুরূপা অর্জুনকে বেছে নিয়েছিল সম্মুখ সমরে ।
"দই চাই গো দই চাই , তুলনা তাহার নাই"
এই উচ্ছ্বল প্রকৃতি মায়ের কথাকে উপেক্ষা করে আনন্দকে জলদান করে সমাজের বেড়াজাল থেকে বেরিয়ে এসেছে। একটি গণ্ডুষ জল যেন তৎকালীন সমাজ ব্যবস্থার এক বার্তাবাহক। সেই তুমি রবি ঠাকুর, সংসারের বদ্ধ জালেও এভাবেই তুমি বার বার আমার পাশে থেকেছ, আমাকে বলার ভাষা জুগিয়েছ।
তোমায় কি দিয়ে শেষ করব, তোমার সাথে আমার কিসের টান। কোনো নাড়ির টান তো নেই , নেই কোনো প্রত্যক্ষ যোগ। আছে যোগ আছে। তুমিই যে আমার পূর্ণতা। তুমিই যে আমার বাঁচার রসদ - এযে আত্মার সম্পর্ক - আত্মার আত্মীয় - তাকে উপেক্ষা করা যায় রক্তের সম্পর্ক। যা ছিন্ন করবার ক্ষমতা নেই কারো, না কালের, না সময়ের, না এই সমাজের। তাই সব শেষে আমার প্রার্থনা - আরো দেড়শ বছর পর যখন আমার কোনো অস্তিত্ব থাকবে না, তখনও কিন্তু তুমি থেকে যেও কোনো এক গৃহবধুর জীবনসঙ্গী হয়ে, আত্মার আত্মীয় হয়ে। তাকে শিখিয়ে দিও বেঁচে থাকার মত বাঁচতে। সংসারের জাতা কলে পিষ্ঠ হতে হতে সেও যেন ধবল কিরণ গায়ে মেখে, শুকতারার সঙ্গী হয়ে , নিজেকে রবি রশ্মি দিয়ে আবৃত করে রাখে। আর এমনি করেই বেঁচে থাকো সকলের মাঝে, এভাবেই ভালোবাসায় ভুলিয়ে রেখো আমার মতো চিরপ্রেমীদের।
Jayatee Banerjee
যেকোনো রকম প্রশ্ন থাকলে আমাদের জানাতে দ্বিধা করবেন না। আমরা সর্বদা আপনাদের সহায়তায় সচেষ্ট।
আপনাদের মূল্যবান মতামত ও প্রতিক্রিয়া জানাতে নিচে রিপ্লাই বক্সে কম্মেন্ট করুন।
সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের পরবর্তী পোস্ট প্রকাশিত হলে আপডেট পাওয়ার জন্য। ফলো এবং লাইক করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়। বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। পরবর্তী পোস্ট নিয়ে খুব শীঘ্রই আসছি আপনাদের সামনে। ধন্যবাদ।
Please don’t hesitate to ask any question to let us know more about your requirements. We are always there to assist you to make you perform better.
No comments:
Post a Comment