প্রিয় প্রত্যুষা
বৈশাখী ঝড় কাটিয়ে উঠে আজ তুমি বরণ করে নিয়েছ রবিমাসকে। আপন করেছ বিদ্রোহী কবিকে। আমাদের দেহে মনে পরাগ রেনু মেখে দিয়ে ঋদ্ধ করেছ আমার অন্তরকে। তোমার এমাসের বিষয় বড়ই আকর্ষনীয়। আমার মত চির প্রেমীরা কি এই আলোচনার ভার বইতে সমর্থ - দেখি একটু চেষ্টা করে।
একবিংশ শতাব্দীর দোরগোড়াতে দাঁড়িয়ে আজ আমি মধ্য গগনে। এই পাটাতনের ওপর দাঁড়িয়ে মনে আসে সেই গান - পদধ্বনি শুনি তার আমি বারে বারে ছুটে যাই দ্বারে - এই হল অনুভূতি - এই জীবন দর্শনেই সমৃদ্ধ হয়েছি আমি ও আমরা। জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে প্রতিটি ধাপে লতানো গাছের মত জড়িয়ে রয়েছ রবিঠাকুর। সেই ছোটোবেলা থেকেই জীবনমরণ তুঁহু মম - বিদ্যাসাগরের কথামালা ছেড়ে "সহজপাঠে" প্রবেশ করি তখন থেকেই রবি ঠাকুর তুমি আমার সাথী - আমার প্রাণের ভাষা - মুখ এর কথা - লেখার লেখনী। নিজের মেয়ের মধ্যেও একসময় শুনেছিলাম - ছোটো খোকা বলে অ আ শেখেনি সে কথা কওয়া। আজ সেই সব দিনগুলো পার করে এসেছি প্রত্যুষা। এক জীবনযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে শুনতে পাই - যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলো রে। আমরা যে জীবনসংগ্রামে মেতে উঠেছি , সেখানে তো ঠাঁই নাই ঠাঁই নাই ছোট সে তরী - তবুও বোধ হয় পাড়ে দাঁড়িয়ে থাকবার লোকের অভাব হয়না। যে অকৃত্রিম ভালবাসা দিয়ে তুমি কাছে টেনে নিয়েছ রবিঠাকুর তাকে ফিরিয়ে দেবার সাধ্যি কারও নেই গো - এটা তো মানতেই হবে বা মেনে নিতেই হবে। সংসারের চোরাবালিতে দাঁড়িয়ে যখন মনে হয় "আমার মুক্তি আলোয় আলোয়" তেমনি পরক্ষণেই আবার মনে পড়ে ভালবাসি ভালবাসি - কাছে দূরে জলে স্থলে - এভাবে তুমি ভালবাসার বন্ধনেও জড়িয়ে রাখো - তন্বী শ্যামার গলায় আমিই যেন গেয়ে উঠি "প্রেমের জোয়ারে"। এভাবেই অন্তরের অন্তঃস্থলে কোথায় যে তোমার আসন পেতেছি আমি নিজেই - তা বোঝাবার বা বলার সাধ্যি আমার নেই। তুমি রবে নীরবের এক অচ্ছেদ্য বন্ধনে রয়ে গিয়েছ আমার সাথে হয়তো বা থেকেও যাবে শেষ দিন পর্যন্ত। কারণ - তুমিই যে আমার ভালবাসা - না বলা কথার আশ্রয় - আর ফেলে আসা জীবনের পারানি।
আমার এই স্বল্প পরিসর মনে একইভাবে যে উঁকি দেয় অগ্নিবীণা হাতে বিদ্রোহী কবি। যে রবীন্দ্রনাথ সন্দীপ এর মধ্য দিয়ে আমাদের অন্তরকে দেশমাতৃকার পূজায় উদ্বেলিত করে দেয় - সেই মনকেই নাড়া দেয় বিদ্রোহী নজরুল। ধূমকেতুর মত জানান দেয় "বল উন্নত মম শির, শির - নেহারি - বল বীর"। এই ঘোষণা যে আমাদের হৃদয়কে আরও উত্তাল করে তোলে। তাঁর উদ্দীপ্ত ভাষণ বিদ্রোহী রণক্লান্ত সেনার - "........সেই দিন হব আমি শান্ত"। তাঁর সৃষ্টি সুখের উল্লাসে আমাকে যে কোন দূরালোকে ভাসিয়ে নিয়ে যায় তা বলার বাইরে। একই বৃন্তে দুটি কুসুমের মতই তাঁর লেখনী তাঁকে শুধু বিদ্রোহী কবি হিসেবেই পরিচিত করায়নি - তিনি যে সুন্দরের পূজারী , সুদূরের পিয়াসী - তাঁর প্রিয়াকে তিনি সাজিয়েছিলেন ভূষণহারে , খোঁপায় গাঁদায় ফুল গুঁজে আর চৈতী চাঁদের দুল দিয়ে। ফুলের জলসায় আচ্ছাদিত রেখেছেন তাঁর বিপুল সম্ভারকে। আর কণ্ঠে পড়িয়েছেন অনবদ্য সেই মালিকা - এইভাবে ফুলের জলসায় নীরবে রয়েছেন কবি নজরুল।
তাই তো প্রত্যুষা - এভাবেই রবীন্দ্র নজরুলকে জীবনের সঙ্গী করে মাভৈঃ মন্ত্র নিয়ে এগিয়ে চলি - দেখি এই পথ চলার শেষ কোথায় ?
ভাল থেকো প্রত্যুষা
Jayatee Banerjee
আপনাদের মূল্যবান মতামত ও প্রতিক্রিয়া জানাতে নিচে রিপ্লাই বক্সে কম্মেন্ট করুন।
সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের পরবর্তী পোস্ট প্রকাশিত হলে আপডেট পাওয়ার জন্য। ফলো এবং লাইক করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায় , যুক্ত হন আমাদের facebook গ্রুপে। বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। পরবর্তী পোস্ট নিয়ে খুব শীঘ্রই আসছি আপনাদের সামনে। ধন্যবাদ।
Please don’t hesitate to ask any question to let us know more about your requirements. We are always there to assist you to make you perform better.
No comments:
Post a Comment